VATax

বাংলাদেশে প্রদত্ত সরবরাহ।

মূসক আইনের ধারা ১৭: বাংলাদেশে প্রদত্ত সরবরাহ।

(১)ধারা ১৫ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে নিম্নবর্ণিত সরবরাহসমূহ বাংলাদেশে প্রদত্ত হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে-
এখানে বাংলাদেশে প্রদত্ত সরবরাহ বলতে করযোগ্য সরবরাহকে বুঝানো হয়েছে। অধ্যায়ভিত্তিক আলোচনার তৃতীয় অধ্যায়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।)

(ক) আবাসিক ব্যক্তি কর্তৃক সরবরাহ,
(বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কিংবা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, বাংলাদেশের নাগরিক (যিনি ১৮৩ দিনের কম সময় বিদেশে অবস্থান করেন এমন ব্যক্তি) কর্তৃক প্রদত্ত সরবরাহকে বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এ ধারার মাধ্যমে বাংলাদেশে বসবাসকারী কোন ব্যক্তি কর্তৃক বাংলাদেশের সীমায় করযোগ্য পণ্য বা সেবার সরবরাহকে মূসকযোগ্য করা হয়েছে। এ সরবরাহই আবাসিক ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত সরবরাহ।

(খ) অনাবাসিক ব্যক্তি কর্তৃক বাংলাদেশের কোন নির্দিষ্ট স্থান হইতে বা উহার মাধ্যমে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনাপূর্বক প্রদত্ত সরবরাহ।
(অনাবাসিক ব্যক্তির প্রত্যক্ষ উপস্থিতিতে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা বা বিদেশে অবস্থান করেও বাংলাদেশে অফিস স্থাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভৌগোলিক সীমায় অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনাকে বোঝানো হয়েছে।

(গ) দফা (খ)-তে উল্লিখিত সরবরাহ ব্যতীত অনাবাসিক ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত সরবরাহ, যদি সরবরাহটি-
(দফা (খ)-তে উল্লিখিত সরবরাহ ব্যতীত বলতে অনাবাসিক ব্যক্তির বাংলাদেশে অবস্থান কিংবা, অফিস স্থাপনব্যতীত সরাসরি বিদেশ থেকে অর্থনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনাকে বুঝানো হয়েছে।)

(অ) স্থাবর সম্পত্তির সরবরাহ হয় এবং উক্ত স্থাবর সম্পত্তি সংক্রান্ত ভূমির অবস্থান বাংলাদেশে হয়:
(বিদেশি কোন রিয়েল এস্টেট কোম্পানি বাংলাদেশে কোন বিল্ডিং তৈরি করলে কিংবা, জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করলে এ কার্যক্রম বাংলাদেশি ভূমি সংশ্লিষ্ট হওয়ায় ঐ বিদেশী রিয়েল এস্টেট কোম্পানির কার্যক্রম অনাবাসিক ব্যক্তি কর্তৃক স্থাবর সম্পত্তির সরবরাহ হিসেবে বিবেচিত হবে।)
(আ) পণ্যের সরবরাহ হয় এবং উহা বাংলাদেশে হস্তান্তর, অর্পণ, স্থাপন বা সংযোজন করা হয়।
(অনাবাসিক ব্যক্তির বাংলাদেশে প্রত্যক্ষ উপস্থিতি ব্যতীত বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমায় পণ্য সরবরাহ (হস্তান্তর, অর্পণ, স্থাপন বা সংযোজন), আমদানি হিসেবে বিবেচিত, যা আমদানি পর্যায়ে মূসকযোগ্য।

(ই) যদি সরবরাহটি নিম্নবর্ণিত কোন সরবরাহ হয় এবং মূসক অনিবন্ধিত ব্যক্তিকে প্রদান করা হয়:-
(ক) সেবা প্রদানকালে বাংলাদেশে অবস্থান করিয়া সেবা প্রদানকারী কায়িকভাবে বাংলাদেশে সেবা প্রদান করেন।
[কোন অনাবাসিক ব্যক্তি যদি বাংলাদেশে সাময়িকভাবে অবস্থান করে কোন অনিবন্ধিত ব্যক্তিকে সেবা প্রদান করে, (যেমন: কন্সালটেন্সি সেবা বা অনুরূপ সেবা) তবে তা মূসকযোগ্য।)
(খ) বাংলাদেশে অবস্থিত ভূমির সহিত সরাসরি সংশ্লিষ্ট সেবার সরবরাহ হয়;
(কোন অনাবাসিক ব্যক্তি কর্তৃক বাংলাদেশে অবস্থিত কোন ভূমির সাথে সরাসরি সংশ্লিষ্ট সেবা, যেমন: বাংলাদেশের নির্দিষ্ট কোন ভূমির জরিপ কার্যক্রম সম্পাদন বা কোন ডিজাইন প্রণয়ন ইত্যাদি সেবা সরবরাহ করে তাহলে সেবা গ্রহণকারী মূসক পরিশোধ করবে।)
(গ) বাংলাদেশের কোন ঠিকানায় বেতার ও টেলিভিশন হইতে গৃহীত সম্প্রচার সেবা হয়:
(বাংলাদেশের বাহির হতে যেসব টিভি চ্যানেল বাংলাদেশে সম্প্রচারিত হয়, সেসব টিভি চ্যানেল উপভোগের জন্য যে পণ বাংলাদেশী অনিবন্ধিত ব্যক্তি প্রদান করে, তা মূসকযোগ্য।)
(ঘ) সরবরাহকালে বাংলাদেশে অবস্থিত কোন ব্যক্তির নিকট ইলেক্ট্রনিক সেবা সরবরাহ:
(ইলেক্ট্রনিক সেবার সংজ্ঞা আইনের ধারা-২ এর দফা (১৮) তে দেয়া হয়েছে। এ সেবা (টেলিযোগাযোগ সরবরাহকারীসহ) বাংলাদেশে অবস্থিত কোন ব্যক্তির নিকট সরবরাহ করা হলে তা মূসকযোগ্য।)
(ঙ) টেলিযোগাযোগ সেবা যাহা কোন টেলিযোগাযোগ সরবরাহকারী বা বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে অবস্থানকারী কোন বৈশ্বিক ভ্রমণকারী (global roaming) ব্যতীত বাংলাদেশে অবস্থানরত কোন ব্যক্তি কর্তৃক সূত্রপাত ঘটানো হয়।
(বাংলাদেশে অবস্থানরত কোন ব্যক্তি যদি ভারতীয় কোন ব্যক্তিকে ফোন করে তাহলে একটি টেলিযোগাযোগ সেবার সূত্রপাত হয়। এ সেবা সম্পাদনে আবাসিক টেলিযোগাযোগ সেবা সরবরাহকারীর (যেমনঃ গ্রামীন ফোন, বাংলাদেশ) পাশাপাশি একজন অনাবাসিক টেলিযোগাযোগ সেবা সরবরাহকারীও (যেমনঃ এয়ারটেল, ভারত) অংশ নেয়। এতে বাংলাদেশী গ্রাহক একজন ভারতীয় গ্রাহকের সাথে কথা বলতে পারে। এ সেবার বিপরীতে বাংলাদেশী গ্রাহক মূসক পরিশোধ করবে। মূসক পরিশোধিত এ সেবামূল্যের আংশিক ভারতীয় এয়ারটেল (অনাবাসিক ব্যক্তি) পাবে।
অর্থাৎ এক্ষেত্রে অনাবাসিক বাক্তিও মূসক পরিশোধ করছে। তবে অনাবাসিক টেলিযোগাযোগ সরবরাহকারী বা কোন বৈশ্বিক ভ্রমণকারী (global roaming) বাংলাদেশী নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করে তাদের দেশের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে। এ সেবার বিপরীতে বিদেশ হতে সেবামূল্য দেশে আসে বিধায়, তা রপ্তানি হিসেবে বিবেচিত হয়।)

(২) উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) এর উপ-দফা (আ) এর উদ্দেশ্যপূরণকল্পে কোন অনাবাসিক ব্যক্তি কর্তৃক আমদানিকৃত পণ্য অভ্যন্তরীণ ভোগের নিমিত্ত খালাসের পূর্বে সরবরাহ প্রদান করা হইলে উক্ত সরবরাহ বাংলাদেশের বাহিরে প্রদান করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।

(উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) এর উপ-দফা (আ) তে অনাবাসিক ব্যক্তি পণ্য বাংলাদেশে হস্তান্তর, অর্পণ, স্থাপন বা সংযোজনের উদ্দেশ্যে সরবরাহ করেন। ছলে Destination Principle অনুযায়ী অনাবাসিক ব্যক্তির পক্ষে যিনি ভোক্তা কিংবা, ক্ষেত্রবিশেষে যিনি হস্তান্তর, অর্পণ, স্থাপন বা সংযোজনের কার্যক্রম সম্পাদন করবেন তিনি মূসক পরিশোধ করবেন। তাই অনাবাসিক ব্যক্তিকে মূসক পরিশোধের দায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করতে উক্ত সরবরাহ বাংলাদেশের বাহিরে প্রদান করা হইয়াছে’ মর্মে বিবেচনা করা হয়েছে। ফলে অনাবাসিক ব্যক্তি কর্তৃক বাংলাদেশের ভৌগলিক সীমায় সরবরাহ সত্ত্বেও তাকে মুসক পরিশোধের দায় থেকে অব্যাহতি প্রদান করে যিনি বাংলাদেশে সেবা সরবরাহ করবেন তাকে দায়বদ্ধ করা হয়েছে।

(৩) উপ-ধারা (১) এর দফা (গ) এর উপ-দফা (ই) এর উপ-উপদফা (ঙ) এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে যে ব্যক্তি টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান করেন তিনি সেই ব্যক্তি-

(‘যে ব্যক্তি টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান করেন তিনি সেই ব্যক্তি’ আইনের ইংরেজি ভার্সনে এ বাক্যটি এভাবে উল্লেখ করা হয়েছে- the person who initiates a supply of telecommunications services is the person অর্থাৎ, ‘যে ব্যক্তি টেলিযোগাযোগ সেবার সূত্রপাত করেন।’ তাহলে তা আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণও হয়। বাংলাদেশী টেলিযোগাযোগ সেবার সূচনাকারী উপরোল্লিখিত তিনরূপেই আবির্ভূত হন।)
(ক) যিনি সেবা সরবরাহকারী কর্তৃক নিম্নরূপে সনাক্তযোগ্য হন-
(অ) সরবরাহের সূচনা নিয়ন্ত্রণকারীরূপে:
(আ) সেবার মূল্য প্রদানকারীরূপে:
(ই) সরবরাহের জন্য চুক্তিকারীরূপে:
(এখানে বাংলাদেশী মোবাইল অপারেটরকে (যেমন: গ্রামীণ ফোন) বিদেশী মোবাইল অপারেটর টেলিযোগাযোগ সেবা সরবরাহ করেছে। তাই মোবাইল অপারেটর এখানে সেবা সরবরাহকারী।)

(খ) যদি একাধিক ব্যক্তি দফা (ক) এর শর্তাবলী পূরণ করেন, তাহা হইলে যিনি উক্ত দফার তালিকায় অধিকবার দৃশ্যমান হন; এবং
(বাংলাদেশে টেলিযোগাযোগ সেবা সরবরাহকারী ও আইজিডব্লিউ বা আইসিএক্স সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ভিন্ন। তাই একটি কল সম্পাদনে একাধিক ব্যক্তির আবির্ভাব হয়। তবে একই প্রতিষ্ঠান দুইটি সেবা সরবরাহ করলে একাধিক ব্যক্তি একাধিকবার দৃশ্যমান না-ও হতে পারে।)

(গ) সেবার ধরন বা প্রকার বা তালিকাভুক্ত ব্যক্তিগণের বাস্তব অবস্থান কোন কারণে সরবরাহকারী কর্তৃক সনাক্ত করা সম্ভব না হইলে, সেই ক্ষেত্রে উক্তরূপ সেবা বা উক্তরূপ শ্রেণীর গ্রাহকের নিকট প্রদত্ত টেলিযোগাযোগ সেবার সকল প্রকার সরবরাহ, সরবরাহকারীর নিকট হইতে চালানপত্র গ্রহণকারী গ্রাহকের যে প্রকৃত বা বাস্তব আবাসিক বা বাণিজ্যিক ঠিকানা রহিয়াছে সেই স্থানে সরবরাহটি প্রদান করা হইয়াছে বলিয়া গণ্য হইবে।
(যদি কোন বাংলাদেশী ব্যক্তি মোবাইল সীম রোমিং করে বিদেশে ব্যবহার করে তাহলে টেলিযোগাযোগ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান গ্রাহককের বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় সনাক্ত করা যাক বা না যাক, ঐ ব্যক্তির আবাসিক বা বাণিজ্যিক ঠিকানায় মূসক ও সম্পূরক শুল্কসহ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) বিল প্রেরণ করবেন। অর্থাৎ, বাংলাদেশী ঐ টেলিযোগাযোগ সেবা গ্রহণকারীকে (রোমিং হওয়া সত্ত্বেও) বাংলাদেশে সেবা মূল্য পরিশোধ করতে হবে।)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top