কিয়াসের সংজ্ঞা:
কিয়াস (Qiyas) ইসলামিক জুরিসপ্রুডেন্স বা ফিকাহ-এ একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা, যা মূলত অনুরূপ পরিস্থিতির ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ এর প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এটি তখন ব্যবহৃত হয়, যখন কুরআন বা হাদীসে কোনো নির্দিষ্ট বিধান স্পষ্টভাবে উল্লেখিত না থাকে, এবং একই ধরনের বা সম্পর্কিত কোনো বিষয় থেকে যুক্তি দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
কিয়াস ইসলামী আইন তৈরি করার একটি পদ্ধতি, যা কুরআন এবং হাদীস-এর বাইরেও অন্যান্য পরিস্থিতির আলোকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত ধর্মীয় বা নৈতিক সমস্যা সমাধানে একটি মেধা ও যুক্তির ভিত্তিতে নতুন বিধান তৈরি করার প্রক্রিয়া।
কিয়াসের সংজ্ঞা:
কিয়াস হল, এমন একটি পদ্ধতি যার মাধ্যমে কুরআন বা হাদীস-এ না থাকা কোনও বিষয় বা প্রশ্নের উত্তর বের করতে অনুরূপ পরিস্থিতি বা উপমা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এটি মূলত নিম্নলিখিতভাবে কাজ করে:
মূল ঘটনা (Asl) – প্রথমত, কোনো নির্দিষ্ট বিধান বা সিদ্ধান্তের জন্য কুরআন বা হাদীসে স্পষ্ট কিছু নির্দেশনা থাকতে হবে।
নতুন ঘটনা (Far’) – দ্বিতীয়ত, যেটি কুরআন বা হাদীসে স্পষ্টভাবে উল্লেখিত নেই, সে বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সাদৃশ্য বা সমতা (Illah) – তৃতীয়ত, মূল ঘটনা এবং নতুন ঘটনাটির মধ্যে একটি সাধারণ মৌলিক উপাদান বা যুক্তি থাকতে হবে, যা উভয়ের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করতে সাহায্য করবে।
কিয়াসের উদাহরণ:
ধরা যাক, কুরআনে মদ (দ্রাক্ষারস) পান নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কুরআনে মদের বাইরে কোনো অন্যান্য মাদক দ্রব্যের নিষেধাজ্ঞা বা বিধান নেই। তবে, কিয়াস পদ্ধতিতে, অন্য কোনো মাদক দ্রব্য যেমন হেরোইন বা গাঁজা, এই ধরনের মাদকের বিপদ ও ক্ষতির কারণে মদ পান নিষিদ্ধের অনুরূপ হবে এবং তাই এগুলোও নিষিদ্ধ হবে। এই সিদ্ধান্তের জন্য সাদৃশ্য বা illath হল “বিভিন্ন মাদক দ্রব্যের ক্ষতিকর প্রভাব”।