[(১) ধারা ৩৩ এর বিধানাবলী সত্ত্বেও, উপ-ধারা (২) এর বিধান সাপেক্ষে, কোন সরবরাহকারী উৎসে কর কর্তনকারী সত্তার নিকট চুক্তি, টেন্ডার, কার্যাদেশ বা অন্যবিধভাবে অব্যাহতিপ্রাপ্ত বা শূণ্যহার বিশিষ্ট নহে এমন সরবরাহ প্রদান করিলে, উৎসে কর কর্তনকারী সত্তা উক্ত সরবরাহকারীর নিকট পরিশোধযোগ্য পণ হইতে বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্দিষ্টকৃত মূসক উৎসে কর্তন করিবে।]’
[আইনের ধারা-২ এর দফা (২১) তে উৎসে কর্তনকারীর সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। প্রথম তফসিলে উল্লিখিত পণ্য বা সেবা অব্যাহতিপ্রাপ্ত এবং রপ্তানি ও প্রচ্ছন্ন রপ্তানি শূন্যহার বিশিষ্ট। এসকল পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে উৎসে মূসক কর্তন প্রযোজ্য নয়। উৎসে কর্তন বিষয়ে অধ্যায়ভিত্তিক আলোচনা অংশে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
ধরি, একটি পণ্যের মূসকসহ মূল্য ১০০ টাকা হলে এটি আইনের ধারা ২ এর (৫৯) অনুযায়ী পণ। আলোচ্য পণ্যের উপর ৭.৫% হারে মূসক আরোপিত থাকলে উৎসে কর্তনকারীর নিকট পরিশোধযোগ্য পণ ১০০ টাকা হওয়ায় ১০০x৭.৫/১০৭.৫ ৬.৯৮ টাকা উৎসে কর্তন করবে।
ধারা ৪৯ এর উপ-ধারা (২) তে অনিবন্ধিত ব্যক্তির নিকট থেকে সরবরাহ গ্রহনের ক্ষেত্রে ভোক্তাকে মুসক পরিশোধের জন্য দায়বদ্ধ করা হয়েছে। অনিবন্ধিত ব্যক্তি যে পণ্য বা সেবা সরবরাহ করে সে পণ্য বা সেবার মধ্যে মূসক অন্তর্ভুক্ত থাকে না। ফলে এ মূল্য মূসক ব্যতীত মূল্য বা সরবরাহ মূল্য। তাই এ ধরনের সরবরাহ গ্রহনের ক্ষেত্রে মূসক ব্যতীত মূল্যের সাথে মূসকযুক্ত করলে পণ হয়, যা পরিশোধযোগ্য পণ। তাই এ ধরনের সরবরাহের ক্ষেত্রে মূসক ব্যতীত মূল্যের সাথে মূসক হার গুন করতে হবে বা মুসকব্যতীত মূল্যের সাথে মুসক যোগ করে (যা পরিশোধযোগ্য পণ হবে) ঐ মূল্যের সাথে কর ভগ্নাংশ গুন করে উৎসে কর্তন করতে হবে।)
(২) সরবরাহকারী নিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত না হইলে এবং একর চালানপত্র। জারি না করিলে, উৎসে কর কর্তনকারী সত্তা সরবরাহকারীর নিকট হইতে কোন সরবরাহ গ্রহণ করিবে না এবং সরবরাহকারীকে উক্ত সরবরাহের বিপরীতে কোন মূল্য পরিশোধ করিবে না।
তবে শর্ত থাকে যে, সরবরাহ গ্রহীতা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অনিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত নহে এইরূপ ব্যক্তির নিকট হইতে সরবরাহ গ্রহণ করিয়া থাকিলে প্রযোজ্য মূসক পরিশোধে তিনি দায়ী থাকিবেন।।
[কর চালানপত্র এবং উৎসে কর কর্তন সনদপত্র প্রদান করা না হলে দাখিলপত্রে প্রদেয় কলামে তা প্রদর্শিত হবে না। মূসক-৬.৩ প্রদান না করে মূসক-৬.৬ দিয়ে সমন্বয় গ্রহণ করলে মূসক-৬.৩ তে যে পরিমাণ মুসক উল্লেখ করা হয়নি সরকার সে পরিমাণ রাজস্ব কম পাবে। সুতরাং এক্ষেত্রে, কর চালানপত্র মূসক-৬.৩ প্রদান করতে হবে।
শর্তাংশে অনিবন্ধিত বা তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের নিকট হতে মূসক চালানবিহীন কোন সরবরাহ গ্রহণ করলে সরবরাহমূল্যের উপর প্রযোজ্য মূসক সরবরাহ গ্রহীতা পরিশোধ করবেন মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লিখিত ‘প্রযোজ্য মূসক’ শব্দদুটি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে বেশকিছু জটিলতা আছে। কোন অনিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান অব্যাহতিপ্রাপ্ত বা নিবন্ধনযোগ্য হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে মূসক শূন্য হতে পারে বা. তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ৪% হারে টার্নওভার ট্যাক্স প্রযোজ্য হতে পারে। তাহলে এসব ক্ষেত্রে মূসকের উৎসে কর্তনযোগ্য হার কি হবে? আইনের ধারা ২ এর দফা (৩) অনুযায়ী প্রথম তফসিলের আওতাভুক্ত পণ্য ও সেবা অব্যাহতিপ্রাপ্ত। এসকল পণ্য বা সেবার ক্ষেত্রে উৎসে কর্তন প্রযোজ্য হবে না। প্রথম তফসিলভুক্ত পণ্য বা সেবা ব্যতীত অন্য সকল পণ্য বা সেবা মূসকযোগ্য। যোগানদারের সংজ্ঞা বিবেচনায় প্রথম তফসিলভুক্ত পণ্য বা সেবা ব্যতীত অন্য কোন পণ্য বা সেবা অনিবন্ধিত/তালিকাভুক্ত/নিবন্ধনযোগ্য কিন্তু নিবন্ধিত নয়, এমন সরবরাহকারী কর্তৃক সরবরাহ করা হলে উৎসে কর্তনকারী প্রতিষ্ঠানকে যোগানদার হিসাবে ৭.৫% হারে উৎসে মূসক পরিশোধ করতে হবে।)
(৩) উৎসে কর কর্তনকারী সত্তা নির্ধারিত শর্ত ও পদ্ধতিতে উৎসে মূসক কর্তন ও পরিশোধ করিবে।
(৪) উৎসে কর কর্তন এবং সরকারি কোষাগারে জমা প্রদানের জন্য উৎসে কর কর্তনকারী সত্তা এবং সরবরাহকারী যৌথ ও পৃথকভাবে দায়ী থাকিবে।
(৫) কোন প্রকল্পের আওতায় কোন সেবা গ্রহণকারী কর্তৃক প্রদেয় মূল্য সংযোজন কর যদি সেবা গ্রহণকারী বা, ক্ষেত্রমত, সেবার মূল্য বা কমিশন পরিশোধকারী ব্যক্তি সেবার মূল্য বা কমিশন পরিশোধকালে নির্ধারিত পদ্ধতিতে উৎসে আদায় বা কর্তনপূর্বক সরকারি ট্রেজারিতে জমা করেন এবং উক্ত সেবা সরবরাহকারী ব্যক্তি কর্তৃক উক্ত সমুদয় সেবার অংশবিশেষ সরবরাহের লক্ষ্যে কোন সাব-কন্ট্রাক্টর, এজেন্ট বা অন্যকোন সেবা সরবরাহকারী ব্যক্তিকে নিয়োগ করেন, সেইক্ষেত্রে উক্ত সেবা সরবরাহকারীর সাব-কন্ট্রাক্টর, এজেন্ট বা নিয়োগকৃত অন্যকোন সেবা সরবরাহকারী ব্যক্তির নিকট হইতে, উক্ত সেবার উপর প্রাথমিক পর্যায়ে প্রযোজ্য মূল্য সংযোজন কর আদায় বা কর্তন এবং সরকারি ট্রেজারিতে জমা প্রদানের দালিলিক প্রমাণাদি উপস্থাপন সাপেক্ষে মূল্য সংযোজন কর এই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে না বিধায়। পুনরায় উৎসে মূল্য সংযোজন কর আদায় করা যাইবে না। তবে, প্রকল্পের আওতায় পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে এই বিধান প্রযোজ্য হইবে না।)